শাহীন আবদুল বারী
Published:2025-07-20 21:53:31 BdST
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনটাঙ্গাইলে কালিহাতী-৪ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ডাঃ শাহ আলম তালুকদার
টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী-৪ আসনটি একসময় আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে এই আসনের মানুষের সেবা করে আসছেন বিএনপি নেতা ডাক্তার মোঃ শাহ আলম তালুকদার। তিনি দীর্ঘ সময়কাল ধরে দলের সাধারণ নেতাকর্মীদের বিপদে আপদে পাশে আছেন। দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাংগাইল-৪ আসনে (কালিহাতী) সম্ভাব্য প্রার্থীদের দলীয় পরিচয় এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হলো।
অধ্যাপক ডা: মো: শাহ আলম তালুকদার
অধ্যাপক ডা: মো: শাহ আলম তালুকদার ১৯৭৭ সাল থেকে অদ্যাবধি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ ধারণ করে রাজনীতি করছেন। অতীতে কালিহাতীতে যে কেউই ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এসেছেন তার পাশে দাঁড়াতে কুন্ঠা বোধ করেননি। এমনকি ২০১৮ সালে কাদের সিদ্দিকীর দলকে যখন কালিহাতী আসন ছেড়ে দেয়া হয় তখনও ডা: শাহ আলম তালুকদার তাদের মনোনীত প্রাথী' ইঞ্জিনিয়ার লিয়াকত আলীর (ধানের শীষ প্রতীক) পক্ষে সক্রিয় ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখার প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য, ড্যাবের আজীবন সদস্য ও সাবেক উপদেষ্টা ড্যাব ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ শাখা এবং জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন এর আজীবন সদস্য।
বেনজীর আহমেদ টিটো
বেনজীর আহমেদ টিটো বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সন্মানিত সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ( ঢাকা বিভাগ) এর দায়িত্ব পালন করছেন।
লুৎফর রহমান মতিন
লুৎফর রহমান মতিন ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। তিনি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির একজন সম্মানিত সদস্য।
ইঞ্জিনিয়ার আ: হালিম মিয়া
ইঞ্জিনিয়ার আ: হালিম মিয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ সভাপতি পদে আছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
শুকুর মাহমুদ
শুকুর মাহমুদ কালিহাতী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক। অন্যান্যদের মতো তিনিও রাজনীতির মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
এছাড়াও বিএনপির মালয়েশিয়া শাখার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার বাদুলুর রহমান এবং টাংগাইল জেলা জিয়া পরিষদের সভাপতি এ কে এম আ: আউয়ালও নির্বাচনী এলাকায় জনসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
টাঙ্গাইলের কালিহাতী-৪ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অতীত রেকর্ড
১৯৭৩ সালে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী - আওয়ামী লীগ; ১৯৭৯- শাজাহান সিরাজ- জাসদ ; ১৯৮৬-লায়লা সিদ্দিকী; ; ১৯৮৮- শাজাহান সিরাজ- জাসদ ( শাজাহান সিরাজের দল); ১৯৯১- শাজাহান সিরাজ( শাজাহান সিরাজের দল) ; ১৯৯৬ এর ১৫ ই ফেব্রুয়ারী নির্বাচনে - শাজাহান সিরাজ- বিএনপি ; ১৯৯৬,জুন - লতিফ সিদ্দিকী - আওয়ামী লীগ; ২০০১- শাজাহান সিরাজ- বিএনপি। ২০০৮ - আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী -আওয়ামী লীগ; ২০১৮ - সোহেল হাজারী- আওয়ামী লীগ। উল্লেখ্য ১৯৮৬, ১৯৮৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহন করেনি।
কালিহাতী-৪ আসনটি ২টি পৌরসভা ও ১৩ টি ইউনিয়ন নিয়ে ঘটিতঃ পৌর সভা দুটি কালিহাতী ও এলেংগা। ১৩টি ইউনিয়ন -দুগা'পুর,দশকিয়া, গোহালিয়াবাড়ি, শল্লা, নারিন্দা, বাংড়া, সহদেবপুর, কোকডোহরা,পাইকরা, বল্লা, নাগবাড়ি, বীর বাসিন্দা ও পারখী। সর্বমোট ভোটার সংখ্যা আছে প্রায় তিন লাখ ৮০ হাজার।
কালিহাতী-৪ আসনের বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষের মন্তব্য ও বক্তব্য
মানবতার ফেরিওয়ালা অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শাহ আলম তালুকদার ইতোমধ্যে সর্বস্তরের মানুষের স্পন্দনে জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি সমৃদ্ধ, স্বনির্ভর ও দুর্বৃত্তপরায়নমুক্ত কালিহাতী গড়ার লক্ষ্যে আলোকিত হয়ে উঠছেন। সাংগঠনিক পদে না থেকেও কিভাবে একটি দলকে সুসংগঠিত করা যায় তার জলন্ত উদাহরণ টাংগাইলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সমর্থিত খ্যাতিসম্পন্ন চিকিৎসক অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শাহ আলম তালুকদার। ১৯৭৭ সালের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রেফারেন্ডাম ভোট থেকে শুরু করে পরবর্তীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দলের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
চাচা মরহুম নুরুল আলম তালুকদারের (প্রতিষ্ঠাতা সিনিয়র সহ সভাপতি, টাংগাইল জেলা বিএনপি ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, কালিহাতী উপজেলা বিএনপি) হাত ধরেই তার রাজনৈতিক পদচারণা শুরু। নুরুল আলম তালুকদার ১৯৭৯ ও ১৯৯১ সালে টাংগাইল -০৪ কালিহাতী আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হয়েই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন। এই নির্বাচনে ডাঃ মোঃ শাহ আলম তালুকদারের ভুমিকা ছিলো চোখে পড়ার মতো।
মরহুম নুরুল আলম তালুকদারের যোগ্য উত্তরসুরী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শাহ আলম তালুকদার ১৯৭৭ সাল থেকেই চাচার একান্ত সহচর হিসাবে কাজ করে আসছেন। ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে অদ্যাবধি যখনই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নীতি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ ও ইসলামের মূল্যবোধে বিশ্বাসী কেউ কালিহাতীতে ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে এসেছে তার পাশে দাঁড়িয়ে সার্বিক সহযোগিতা করতে কুন্ঠাবোধ করেন নাই। এতে করে বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে তাকে এবং তার পরিবারকে নাজেহালের শিকার হতে হয়েছে। স্বৈরাচার সরকারের আমলে পুরো আন্দোলনের সময় নিহত, আহত, জেল, জুলুম, মামলা – হামলায় সকল স্তরের জাতীয়তাবাদী দলের সমর্থিতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাদের পরিবারের সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রেখেছেন।
২০২০-২০২২ বিশ্বব্যাপী করোনার মহামারীতেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য। করোনার পর বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী দলের ডাকে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের সবাইকে একই কাতারে দাঁড়ানোর জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এর প্রমাণ কালিহাতীর জাতীয়তাবাদী ও তার অঙ্গসংগঠনের প্রতিটি নেতা কর্মীদের অভিব্যক্তি। সবার মুখে একই কথা।
অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শাহ আলম তালুকদার কালিহাতীতে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রানের সঞ্চার ফিরিয়ে এনেছেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া, পরবর্তীতে দেশনেত্রী, মাদার অফ ডেমোক্রেসি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্বে এবং দেশনায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফার বাস্তবায়নে লক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন।
বিগত ৩৪ বছর যাবত প্রতি সপ্তাহে নিজ এলাকায় ফ্রি ও স্বল্পমুল্যে চিকিৎসা প্রদান এবং দুস্থ মানুষের পাশে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও ধর্মীয় উন্নয়ন কাজে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছেন।
এভাবেই মানবের তরে নিজেকে নিবেদিত করতেই প্রতিনিয়ত জনসাধারণের মাঝে বিচরণ করে আছেন ডাঃ শাহ আলম তালুকদার। নীরবে নিভৃতে মানুষের সেবা করতেই তিনি বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তিনি একজন নিবেদিত এবং নিভৃতচারী আলোকিত মানুষ। কালিহাতীতে যোগ্য নেতৃত্ব এবং মানুষের পাশে থাকা এই মানুষটির প্রতি আস্থাশীল দলটির অধিকাংশ নেতাকর্মী।
সমৃদ্ধ, স্বনির্ভর ও দুর্বৃত্তপরায়নমুক্ত কালিহাতী গড়ার প্রত্যয়ী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শাহ আলম তালুকদার ৫ ই আগষ্ট ১৯৫৯ সালে টাংগাইল জেলার কালিহাতি উপজেলার পারখী ইউনিয়নের আমজানী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম ও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। মাতৃগর্ভে থাকাবস্থায়ই পিতা আলহাজ্ব ছব্দর আলী তালুকদার ইন্তেকাল করেন যিনি সমাজহিতৌষী ও পরোপকারী লোক ছিলেন। অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শাহ আলম তালুকদার যখন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে অধ্যয়নরত তখন তার মা সবুরা খাতুন ইন্তেকাল করেন। মহান আল্লাহর উত্তম ফয়সালায়, সকলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে, তিনি আলোকিত ছাত্র হিসাবে পরিচিতি লাভ করেন। এলাকাবাসীর আদর, স্নেহ, ভালবাসার ছোয়ায় তিনি সিক্ত। এই কথা অকপটে স্বীকার করেন বলেই কারো পাশে দাঁড়াতে কার্পণ্য বোধ করেন না। তিনি সমকালীন সর্বাধিক সমাদৃত শিশু ও জন্মগত ত্রুটি বিশেষজ্ঞ সার্জন।
ডাঃ মোঃ শাহ আলম তালুকদারের ভাই মরহুম এডভোকেট আব্দুল করিম তালুকদার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের জাদরেল নেতা ছিলেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলিম হলের ছাত্র সংগঠনের সভাপতি ছিলেন। তিনি ১৯৬২ সালে সংসদীয় এলাকা কালিহাতি ও ঘাটাইল থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মরহুম জনাব আবদুল হামিদ চৌধুরী।
ত্রয়োদশ নির্বাচনে টাঙ্গাইল এর সবক'টি আসনের মধ্যে কালিহাতি-৪ আসনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। এখানে বিএনপির হারিয়ে যাওয়া আসনটি শাহজাহান সিরাজকে দিয়ে উদ্ধার করা হয়েছিল। কিন্তু পতিত সরকারের ১৫ বছর শাসনামলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা, শারীরিক-মানুষিক নির্যাতন নিপীড়ন এর ষ্টীম রোলার চালানো হয়েছে। বিএনপি মিটিং মিছিল করতে গিয়ে নেতাকর্মীরা মারধরের শিকার হয়ে অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। কেউ বা জেলের ঘানি টানতে ১৫ বছর কারাগারে ছিলেন। অনেকেই পলাতক জীবন যাপন করেছেন। বাবা-মা, ভাই-বোন, শ্বশুর-শাশুড়ি বা কোন আত্মীয় স্বজন মারা গেলে তাদেরকে কবর দেয়ার সুযোগও হয়নি অনেক নেতাকর্মীর।
নিজের জীবনকে বাজি রেখে এই অসহায় মানুষ ও পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছেন ডাঃ মোঃ শাহ আলম তালুকদার। এখন যারা কালিহাতি থেকে এমপি পদে নির্বাচন করতে মরিয়া তাদের প্রত্যেকের কমবেশি নেতাকর্মীদের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতা ছিলো এবং আছে। তবে ডাঃ শাহ আলম তালুকদার একজন নিবেদিতপ্রান মানুষ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে কালিহাতীবাসীর আবেদন নিছক যোগ্য, সৎ ও আদর্শবান ডাঃ শাহ আলম তালুকদারকে ত্রয়োদশ নিবার্চনে মনোনয়ন দেয়া হোক।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.